ঈমান শব্দের আভিধানিক অর্থ স্বীকার করা, স্বীকৃতি দেওয়া, মতান্তরে দৃঢ়ভাবে অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করা। ইসলাম ধর্মে ঈমানের অর্থ হচ্ছে, কোন প্রকার প্রমাণ ছাড়াই নিচের সমস্ত কিছু নিঃসন্দেহে মেনে নেয়া এবং দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করাঃ
হাদিসেও এই বিষয়ে খুব পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে যে, সংশয় সন্দেহ যুক্তিবুদ্ধি দিয়ে ইসলামের বিধানগুলোকে যাচাই করতে না চাওয়াই ঈমান (( মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত), হাদিসঃ ৬৪ )) -
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস)
পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ – সন্দেহ-সংশয়, কুমন্ত্রণা
৬৪-[২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একদা) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কতক সাহাবা (সাহাবা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের মধ্যে কেউ তার মনে কোন কোন সময় এমন কিছু কথা (সংশয়) অনুভব করে যা মুখে ব্যক্ত করাও আমাদের মধ্যে কেউ তা গুরুতর অপরাধ মনে করে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি তা এমন গুরুতর বলে মনে কর? সাহাবীগণ বললেন, হাঁ! তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটাই হলো স্বচ্ছ ঈমান। (মুসলিম)[1]
[1] সহীহ : মুসলিম ১৩২, আবূ দাঊদ ৫১১১, আহমাদ ৯৬৯৫। এ হাদীসটি ইমাম হাকিম (রহঃ)-এর পা-ুলিপি হতে বিলুপ্ত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
বাঙলাভাষায় অন্ধবিশ্বাস এর অর্থ হচ্ছে, যুক্তিবুদ্ধি ব্যবহার না করে বা বিচার বিবেচনা না ক’রে কোনো কিছু মেনে নেয়া। মজার বিষয় হচ্ছে, ইসলামে ঈমানের সংজ্ঞাও ঠিক একই।
তাফসীরে জালালাইনে ইমানের সংজ্ঞায় যা বলা হয়েছে, সেটি হচ্ছে, (( তাফসীরে জালালাইন, প্রথম খণ্ড, ইসলামিয়া কুতুবখানা, পৃষ্ঠা ৭৭ ))
নবী করীম যা নিয়ে এসেছেন, তা তাঁর প্রতি আস্থা রেখে বিশ্বাস করা।
অনুভূতিগ্রাহ্য ও দৃশ্যমান কোনো বস্তুতে কারো কথায় বিশ্বাস করার নাম ঈমান নয়ঃ মুমিনের পরিচয় দিতে গিয়ে আয়াতে দুটি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। ঈমান ও গায়েব। এ থেকে বোঝা গেল, অনুভূতিগ্রাহ্য ও দৃশ্যমান কোনো বস্তুতে কারো কথায় বিশ্বাস করার নাম ঈমান নয়। উদাহরণস্বরূপ বলা হয় যে, কোনো ব্যক্তি যদি এক টুকরো সাদা কাপড়কে সাদা এবং এক টুকরো কালো কাপড়কে কালো বলে এবং এক ব্যক্তি তার কথা সত্য বলে মেনে নেয়, তাহলে একে ঈমান বলা যায় না। এতে বক্তার কোনো প্রভাব বা দখল নেই। অপরদিকে রাসূল এর কোনো সংবাদ কেবলমাত্র রাসূল এর উপর বিশ্বাসবশত মেনে নেওয়াকেই শরিয়তের পরিভাষায় ঈমান বলে।
তাফসীরে জালালাইনে আরো বলা আছে, ঈমান অর্থই গায়েবের ওপর বিশ্বাস। গায়েব সম্পর্কে বলা হয়েছে, যা সম্পর্কে যুক্তিবুদ্ধি দিয়ে কোন কিছুই জানা সম্ভব নয় (( তাফসীরে জালালাইন, প্রথম খণ্ড, ইসলামিয়া কুতুবখানা, পৃষ্ঠা ৭৮-৭৯ )) –
এবারে আসুন শরহে মুসলিম গ্রন্থ থেকে ঈমান সম্পর্কিত একটি অধ্যায় পড়ে নেয়া যাক, (( শরহে মুসলিম, প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা সহ বঙ্গানুবাদ, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৮ ))
আসুন একটি ওয়াজ শুনি,
ইসলামের প্রতিষ্ঠিত আকীদা হচ্ছে, কোরআন হাদিসের ওপর কোন যুক্তি বুদ্ধি প্রমাণ ইত্যাদির কোন মূল্য নেই। আসুন একটি ওয়াজ শুনি,
এবারে আসুন প্রখ্যাত আলেম মুফতি ইব্রাহিমের বক্তব্য শুনে নেয়া যাক,
এবারে আসুন আহমদুল্লাহর একটি বক্তব্য শুনে নিই,