09.বিবেক বিবেচনা ব্যবহার হারাম
Prem Chand
April 27, 2024
210 views
আকীদা ও হালাল হারাম

ইসলামে ধর্ম বিষয়ে মানুষের অভিমত ও বিবেক বিবেচনাকে সরাসরিই নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। সুনান আবু দাউদে হযরত আলীর সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, ধর্মের মাপকাঠি কখনো মানুষের বিবেক বিবেচনা কিংবা অভিমতের ওপর নির্ভরশীল হতে পারে না। এটি হচ্ছে শুধুমাত্র নির্দেশনা পালন (( সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত), হাদিস নম্বরঃ ১৬৪ )) -

সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
১/ পবিত্রতা অর্জন
পরিচ্ছেদঃ ৬৩. (মোজার উপর) মাসাহ্ করার নিয়ম
১৬৪। আ‘মাশ (রহঃ) পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তাতে রয়েছে (‘আলী (রাঃ) বলেনঃ) ধর্মের মাপকাঠি যদি রায়ের (মানুষের মনগড়া অভিমত ও বিবেক-বিবেচনার) উপর নির্ভরশীল হত, তাহলে মোজার উপরিভাগের চেয়ে তলার দিক মাসাহ্ করাই অধিক যুক্তি সঙ্গত হত। অথচ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর (পায়ের) মোজাদ্বয়ের উপরিভাগই মাসাহ্ করেছেন।[1]
সহীহ।
হাদীসটি ওয়াকী‘ (রহঃ) আ‘মাশ হতে তাঁর (উপরোক্ত) সানাদে বর্ণনা করেছেন। তাতে রয়েছে (‘আলী (রাঃ) বলেনঃ) আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তাঁর মোজার উপরিভাগ মাসাহ্ করতে দেখার পূর্বে পায়ের তলার দিক মাসাহ করাকে অধিক যুক্তিসঙ্গত মনে করতাম। ওয়াকী’ বলেনঃ এখানে ‘উপরিভাগ’ দ্বারা বুঝানো হয়েছে (পায়ের) মোজাদ্বয়ের উপর। হাদীসটি আ‘মাশ থেকে ঈসা ইবনু ইউনুসও ওয়াকী‘র অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আবুস্ সাওদা হাদীসটি ইবনু ‘আবদি খাইর হতে তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেছেন এভাবেঃ আমি ‘আলী (রাঃ)-কে অযু করার সময় তাঁর দু’ পায়ের উপরিভাগ ধৌত করতে দেখেছি। তিনি বলেছেন, যদি আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এরূপ করতে না দেখতাম’ …। অতঃপর হাদীসের শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করেন।
সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আ‘মাশ (রহঃ)

আসুন আরেকটি হাদিস পড়ি (( সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৬৮১০ )) -

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৮৫/ কুরআন ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারন
পরিচ্ছেদঃ ৩০৮১. মনগড়া মত ও ভিত্তিহীন কিয়াস নিন্দনীয়। আর আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার অনুসরণ করো না……. (১৭ঃ ৩৬)
৬৮১০। আবদান (রহঃ) … আমাশ (রহঃ) বলেন। আমি আবূ ওয়ায়েলকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি সিফফীনের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। মূসা ইবনু ইসমাঈল সাহল ইবনু হুনায়ফ (রাঃ) বলেন, হে লোকেরা! দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের মনগড়া মতামতকে নির্ভরযোগ্য মনে করো না। কেননা আবূ জানদাল দিবসে (হুদায়বিয়ার দিবসে) আমার এমন মনে হচ্ছিল যে, যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করতে পারতাম তাহলে অবশ্যই আমি তা প্রত্যাখ্যান করতাম। যে কোন ভয়ষ্কর যুদ্ধের জন্য আমরা যখনই তরবারী কাঁধে ধারণ করেছি, তখনই তরবারী আমাদের কাঙ্ক্ষিত লড়ার দিকে পথ সুগম করে দিয়েছে। বর্তমান বিষয়টি স্বতস্ত্র। রাবী বলেন, আবূ ওয়ায়েল (রাঃ) বলেছেনঃ আমি সিফফীনের যুদ্ধে শরীক ছিলাম; বড়ই মন্দ ছিল সিফফীনের লড়াই।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আ‘মাশ (রহঃ)

এবারে আসুন এর ব্যাখ্যাটিও পড়ি (( বোখারী শরীফ (বাংলা তরজমা ও ব্যাখ্যা), খণ্ড ৭, পৃষ্ঠা ৩১০ )) -

এবারে আসুন আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের আকীদা গ্রন্থগুলোতে এই বিষয়ে কী লেখা রয়েছে তা পড়ে দেখা যাক। শারহুল আক্বীদা আত-ত্বহাবীয়া অত্যন্ত বিখ্যাত একটি আকীদা গ্রন্থ, যার লেখক  ইমাম ইবনে আবীল ইয আল-হানাফী। তিনি তার বইতে কোরআন হাদিস যা স্পষ্টভাবে বলা আছে সে সব সম্পর্কে সকল উম্মতকে সন্দেহ পোষণ করা, যাচাই করে দেখা, নিজের বিবেক বুদ্ধি সেসব ক্ষেত্রে ব্যবহার করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার কথাই বলা আছে। কারণ দর্শন, যুক্তিবিদ্যা বা তর্কশাস্ত্র পাঠ করলে, সেই নিয়ে চিন্তাভাবনা করলেই ইসলামের ঈমান দুর্বল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই সকল আলেম ওলামা একমত (( শারহুল আক্বীদা আত-ত্বহাবীয়া, লেখক : ইমাম ইবনে আবীল ইয আল-হানাফী, প্রকাশনী : মাকতাবাতুস সুন্নাহ, পৃষ্ঠা ৩৩৩ )) -

আসুন এই প্রসঙ্গে প্রখ্যাত আলেম মুফতি ইব্রাহিমের বক্তব্য শুনে নেয়া যাক,